অবশেষে ‘পপগুরু’খ্যাত কণ্ঠশিল্পী আজম খান চিরবিদায় নিলেন। দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানলেন বাংলাদেশের পপ সংগীতের পথিকৃৎ এই কণ্ঠশিল্পী। রবিবার সকালে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ‘পপ গুরু’। পপ সংগীতশিল্পী আজম খানের পুরো নাম- মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান আজম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬১ বছর।
ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসক কর্নেল ডা. আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, রবিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে মারা যান আজম খান। মুখগহ্বরের ক্যান্সারাক্রান্ত আজম খানকে মাত্র কয়েকদিন আগেই স্কয়ার হাসপাতাল থেকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তার পারিবারিক সুত্র থেকে এবং তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অন্যতম সদস্য ড. কামরুজ্জামান চৌধুরীও নিশ্চিত করেছেন সকলের প্রিয় গুরু আর বেঁচে নেই।
পপগুরুর মরদেহ বর্তমানে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের হিমাগারে সংরক্ষিত আছে। সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামীকাল ৬ জুন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তার মরদেহ রাখা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
শিল্পীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তীতে তাকে কমলাপুরস্থ নিজ বাসভবনে নেওয়া হবে। বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম মসজিদে মরহুমের নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ায় আজম খানের শারীরিক অবস্থার উন্নতির কোনো আশা দিতে পারেননি চিকিৎসকরা। ৯ দিন আগে আজম খানের অবস্থার অবনতি ঘটে। সে দিন থেকেই স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন বাংলাদেশের পপ সঙ্গীতের এই পথিকৃৎ শিল্পী।
২০১০ সালে আজম খানের মুখগহ্বরের ক্যান্সার ধরা পড়ে। এ জন্য দু’বার তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়েও চিকিৎসা করানো হয়।
তবে গত নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে শেষ বারের চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করেই আজম খান ফিরে আসেন। এই কিংবদন্তীর কণ্ঠশিল্পী মুখ গহ্বরের ক্যান্সারে ভুগছিলেন, যা পরবর্তীতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছিল।
এদিকে শিল্পী’র বড় মেয়ে ইমা খান জানিয়েছেন, ‘২২ মে বাবা তার বাম হাতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। ওই দিনই তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর ২৬ মে দুপুরে তার হার্ট অ্যাটাক হয়। পরবর্তীতে তাঁকে হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়। ২৭ মে থেকে বাবা’র অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে লাইফ সার্পোট দিয়ে রাখা হয়। সেই থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লাইফ সার্পোট দিয়েই রাখা হয়েছিলো তাকে। অবশ্য তখনই বাবার চিকিৎসকেরা বলে দিয়েছিলেন যে- তাঁর ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। তাঁর চিকিৎসকেরা আমাদের সকলকে যে কোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে বলেছিলেন।’
‘পপগুরু’ আজম খান ১৯৫০ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের পপ মিউজিকে প্রথম প্রজন্মের অন্যতম শীর্ষশিল্পী হিসেবে ভক্তরা তাকে ‘পপগুরু’ আখ্যা দেয়।
আজম খান আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের সময়টিতে মুক্তিযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরে খালেদ মোশারফের অধীনে কুমিল্লা ও পরবর্তীতে ডেমরা-যাত্রাবাড়ি-গুলশান এলাকার গেরিলা দলের সেকশন ইনচার্জ ছিলেন। তার নেতৃত্বেই ঘটনাবহুল ‘অপারেশন তিতাস’ সংগঠিত হয়েছিল। দেশ স্বাধীন হলে তিনি আবারো পপ সঙ্গীতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
বাংলায় পপ ধারার গানকে জনপ্রিয় করে তুলতে তাঁর ভূমিকা ছিলো অগ্রগণ্য। জীবদ্দশায় তাঁর গাওয়া গান নিয়ে ১৭ টি একক অ্যালবাম এবং অসংখ্য মিক্সড অ্যলবাম প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর গাওয়া কালজয়ী গানের মধ্যে রয়েছে, আলাল ও দুলাল, ওরে সালেকা ওরে মালেকা, এতো সুন্দর দুনিয়া কিছুই রবে না, রেল লাইনের ঐ বস্তিতে, হাইকোর্টে মাজারে, অভিমানী তুমি কোথায়, পাপড়ি কেন বোঝে না, চার কলেমা সাক্ষী দেবে প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
তার দুই মেয়ে ইমা খান ও অরণী খান এবং এক ছেলে হৃদয় খান। তাঁর বড় ভাই সাঈদ খান ও মেজ ভাই সঙ্গীত পরিচালক আলম খান।
বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/রাশা/এইচআর/জুন ০৫/১১
See More About Azam Khan
1 টি মন্তব্য:
নতুন নতুন গল্প ও জোকস পেতে ভিজিট করতে পারেন আমার সাইটে
www.valobasargolpo2.xyz,
বাংলা মজার জোকস,
১৮+ জোকস,
কোপাকুপি জোকস
বাংলা কৌতুক,
হাসির কৌতুক,
bangla jokes,
bangali jokes, mojar jokes,
bangla funny koutuk,
hasir koutuk,
bangla koutuk,
ভালবাসার গল্প,
valobasar Golpo,
Sad Golpo,
মন করার গল্প,
bangla hasir koutuk doctor jokes
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন